রক্তদান একটি মহৎ কাজ।পৃথিবীতে প্রতিদিন এ নানান মানুষের প্রাণ বাঁচাতে রক্তের প্রয়োজন। আসুন আজ আমরা জানবো রক্তদান বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে আজ আমি আপনাদের মাঝে তা উপস্থাপন করছি।
প্রশ্ন ১ঃ-রক্ত দানের জন্য সর্বনিম্ন বয়স কত? উত্তরঃআপনি ইচ্ছে করলে ১৮ বছর বয়সের পর থেকেই রক্ত দান করতে পারেন। [বিঃদ্রঃ কেউ যখন স্বেচ্ছায় নিজ রক্ত অন্য কারো স্বার্থে দান করে, তাকে রক্তদান বলে। এ কারণে রক্তদাতার অবশ্যই সম্মতির প্রয়োজন আছে এবং এর মাধ্যমে পূর্ণ বয়স্ক নয় (১৮ বছরের নিচে) এমন কারো রক্ত নেওয়া নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। এখনকার সময়ে অবশ্য ১৭ ববছর হলেই রক্ত দেওয়ার উপযুক্ত ধরা হয়।]
প্রশ্ন ২ঃ-কারা রক্তদান করতে পারবেন?
উত্তরঃ যারা সুস্থ মানুষ তারা রক্তদান করতে পারবেন। কোন অসুস্থ ব্যক্তি রক্তদান করতে পারবে না। যারা বাতজ্বর,ডায়াবেটিস, জন্ডিস, ম্যালেরিয়া, সিফিলিস, গনোরিয়া, হৃদরোগ,এইডস, চর্মরোগ, টাইফয়েড রোগী তারা রক্তদান করতে পারবে না। এছাড়া সকল সুস্থ ব্যক্তি রক্তদান করতে পারবে।
প্রশ্ন ৩ঃ- জ্বর,সর্দি ও অপারেশন হলে কতদিন পরে রক্ত দিতে পারবে?
উত্তরঃ জ্বর,সর্দি,কাশি হলে সুস্থ হওয়ার ১ সপ্তাহ পর রক্ত দিতে পারবে। অপারেশন হলে নূন্যতম ৬ মাস পর রক্ত দিতে পারবে।
প্রশ্ন ৪ঃ- রক্তদানের সর্বোচ্চ বয়স কত?
উত্তরঃ একজন সুস্থ ব্যক্তি ৪৭ বছর বয়স পর্যন্ত রক্তদান করতে পারবেন।
প্রশ্ন ৫ঃ- রক্তদানের জন্য সর্বনিম্ন ওজন কত?
উত্তরঃ রক্তদানের জন্য পুরুষের সর্বনিম্ন ওজন ৪৫ কেজি এবং নারীর সর্বনিম্ন ওজন ৫০ কেজি হতে হবে। এর চেয়ে কম হলে রক্তদান ঠিক হবে না।
প্রশ্ন ৬ঃ- নারীরা কখন রক্তদান করতে পারবে?
উত্তরঃ একজন সুস্থ নারী ১৭/১৮ বছর বয়স হলেই রক্তদান করতে পারবেন। তবে নারীর মেয়েলি রোগ চলাকালীন ও গর্ভাবস্থায় রক্তদান করতে পারবে না। মেয়েলি রোগ শেষ হওয়ার ৩ দিন পর রক্তদান করতে পারবেন এবং গর্ভপাত হওয়ার ৬ মাস পর রক্তদান করতে পারবেন।
প্রশ্ন ৭ঃ- একজন ব্যক্তি বছরে কতবার রক্তদান করতে পারবেন?
উত্তরঃ একজন সুস্থ পুরুষ বছরে সর্বোচ্চ ৪ বার এবং একজন সুস্থ নারী বছরে সর্বোচ্চ ৩ বার রক্তদান করতে পারবে।
প্রশ্ন ৮ঃ- এন্টিবায়োটিক গ্রহণ ও টিকাদেয়ার কতদিন পর রক্তদান করতে পারবে?
উত্তরঃ এন্টিবায়োটিক গ্রহণের ৭ দিন পর ও টিকাদেয়ার ২৮ দিন পর রক্তদান করতে পারবেন।
প্রশ্ন ৯ঃ- রক্তদানের পূর্ব শর্ত কী?
উত্তরঃ রক্তদানের পূর্ব শর্ত হলো সৎইচ্ছা। রক্তদাতার হিমোগ্লোবিন এর পরিমাণ, ব্লাড প্রেসার, এবং শরীরের তাপমাত্রা ঠিক থাকতে হবে।
প্রশ্ন ১০ঃ- কারা রক্তগ্রহন করতে পারবেন?
উত্তরঃ যাদের হিমোগ্লোবিন কম আছে, থ্যালাসেমিয়া রোগী গন রক্তগ্রহণ করতে পারবেন। রক্তের হিমোগ্লোবিন কমে গেলে মানুষ মারা যায় তাই ঐসময় এ রোগী রক্ত গ্রহন করতে পারবেন।
প্রশ্ন ১১ঃ- রক্তদানের উপকারিতা কী কী?
উত্তরঃ রক্তদানের অনেক গুলো উপকারিতা রয়েছে:-
◼ নিয়মিত রক্তদান করলে রক্তের কোলেস্টেরল কমে যায় এতে করে রক্তদাতার হার্ট আ্যটাক ও হৃদরোগের ঝুঁকি কম থাকে।
◼ বছরে ৩/৪ বার রক্তদান করলে রক্তের লোহিত কণিকা গুলো কে প্রাণবন্ততা বাড়িয়ে দেয়।
◼ রক্তদান করলে লিভার ও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। দেহে থাকা আয়রনের অতিরিক্ত মাত্রা, ক্যান্সারের ঝুঁকির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। এ জন্য রক্তদানের মাধ্যমে আপনি শরীরে আয়রনের একটি স্বাস্থ্যকর মাত্রা বজায় রাখতে পারে, যা ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমায়। এ ছাড়া লিভারের রোগেরও ঝুঁকি কমায়।
◼ এছাড়া নিয়মিত রক্তদান এর মাধ্যমে শরীরের অতিরিক্ত আয়রন এর মাত্রা হ্রাস পায়। যার ফলে রক্তদাতা হিমোক্রোমাটোসিস আক্রান্ত হওয়া থেকে রক্ষা পায় এবং তার ক্যান্সার এর ঝুঁকি কম থাকে।
আসুন আমরা নিয়মিত রক্তদান করি। নিজে সুস্থ থাকি অন্যোর প্রাণ রক্ষা করি।
রক্তদান সম্পর্কে আরো জানতে কল করুন স্বেচ্ছাসেবী রক্তদাতা সংগঠন “রেড ড্রপস বাংলাদেশ” এর অফিসিয়াল নাম্বারে 01742634180 ও 01745502230
সংকলকঃ
মোঃ মেশকাতুল ইসলাম সিয়াম,
সহ দপ্তর সম্পাদক, রাধাপুর উন্নয়ন ফাউন্ডেশন ;
সাংগঠনিক সম্পাদক, রেড ড্রপস বাংলাদেশ ;