সবাই যেন আবেদনের সুযোগ পায় একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি

0
613
আপডেট: ২১ জুলাই ২০২০, ১১:০১
প্রিন্ট সংস্করণ

করোনাকালেও মানুষের জীবন থেমে থাকতে পারে না, থেমে থাকতে পারে না শিক্ষা কার্যক্রমও। এই প্রেক্ষাপটে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষিত একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালাকে বিবেচনা করতে হবে।

প্রতিবছর এপ্রিলে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পরপরই সরকারি-বেসরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়ে যায়। করোনা সংকটের কারণে এবার মার্চের শেষ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। তাই ফল প্রকাশে বিলম্ব হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় যৌক্তিক কারণেই ভর্তি পরীক্ষা শুরু করতে কিছুটা সময় নিয়েছে।

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা মোটামুটি আগের মতোই আছে। অনলাইনে আবেদন করতে হবে। ৯ আগস্ট থেকে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে চলবে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। কয়েক বছর ধরে এসএসসি কিংবা এর সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়ে থাকে। এবারও সেই নীতিই বহাল থাকছে। তবে এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে না। কেবল অনলাইনে করতে হবে। আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫০ টাকা। একজন শিক্ষার্থী সর্বনিম্ন ৫টি এবং সর্বোচ্চ ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য আবেদন করতে পারবে।

সেশন ফিসহ শিক্ষার্থীদের ভর্তির ফি নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে মফস্বল বা পৌর (উপজেলা) এলাকায় এক হাজার, পৌর (জেলা সদর) এলাকায় দুই হাজার, ঢাকা ছাড়া অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকায় তিন হাজার টাকা। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় অবস্থিত এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঁচ হাজার টাকা। কিন্তু সমস্যা হলো করোনাকালে শহর ও গ্রামের বিপুলসংখ্যক মানুষ কাজ হারিয়েছেন। এই মুহূর্তে কোনো রোজগার নেই। ফলে তাঁদের পক্ষে উল্লিখিত ফি জমা দিয়ে সন্তানকে ভর্তি করানো সম্ভব না–ও হতে পারে।

দরিদ্র, মেধাবী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ফি যত দূর সম্ভব মওকুফের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিমালায় বলা হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হলো করোনাকালে বেশির ভাগ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আর্থিক সংকটে আছে, সে ক্ষেত্রে তাদের পক্ষে ভর্তি ফি কম নেওয়া সম্ভব কি না, তা ভেবে দেখার বিষয়। এ ক্ষেত্রে সরকার শিক্ষাঋণের ব্যবস্থা করতে পারে। ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের বিপরীতে স্বল্প সুদে কিংবা বিনা সুদে ঋণ দিতে পারে।

আরেকটি বিষয় কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় রাখতে হবে। অনেক শিক্ষার্থীর অনলাইন সুবিধা নেই। এ সুযোগে ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী সেন্টারগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নিতে পারে। এ ক্ষেত্রেও সরকার ফি নির্দিষ্ট করে দিতে পারে। অথবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্থানীয় শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তরের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অনলাইনে আবেদনের বিষয়ে সহায়তাও করতে পারে। সর্বোপরি কোনো শিক্ষার্থী যাতে ভর্তির আবেদনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয় এবং আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে কারও যাতে পড়াশোনা ব্যাহত না হয়, সেটি সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে।

আপনার মন্তব্য জানান