নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের পার্দুভাবে ব্যাংকের ঋণ/বিনিয়োগ গ্রহীতাদের জন্য বিশেষ সুবিধার সময় আরেক দফা বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ ইং পর্যন্ত কোনো ঋণ/বিনিয়োগ গ্রহীতা ঋণ/বিনিয়োগ বাবদ ব্যাংকের পাওনা শোধ না করলেও খেলাপির তালিকায় দেখানো যাবে না। পূর্বে এই সুবিধা ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ পর্যন্ত নির্ধারিত ছিল। সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে।
নতুন জারিকৃত এ নির্দেশনা অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের কোনো কিস্তি পরিশোধ না করলেও গ্রহীতা খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হবেন না। এ সময়ের মধ্যে ঋণ/বিনিয়োগের ওপর কোনোরকম দণ্ড, সুদ বা অতিরিক্ত ফি (যে নামেই অভিহিত করা হোক না কেন) আরোপ করা যাবে না।
কোনো গ্রাহক স্বেচ্ছায় মেয়াদি ঋণ (স্বল্পমেয়াদি কৃষি ঋণ ও ক্ষুদ্রঋণসহ) কিস্তি পরিশোধ এবং চলতি ও তলবি ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ব্যাংক কর্তৃক যৌক্তিক রিবেট সুবিধা প্রদান করা যাবে। কিস্তি পরিশোধের জন্য বর্ধিত সময়ের সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণের ওপর আরোপিত সুদ আয় খাতে স্থানান্তরকরণ এবং ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণের বিষয়ে পরে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হবে।
ব্যাংক কোম্পানি আইন-১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
তবে ব্যাংকারদের মতে, যখন অর্থনীতির চাকা ঘুরে দাঁড়াচ্ছে তখন এ ধরনের সিদ্ধান্তে ব্যাংক খাতের জন্য আত্মঘাতী হবে। এ খাতে নেমে আসতে পারে নতুন বিপর্যয়। তাদের মতে, এ সময়ে অনেক ব্যবসায়ীরই ঋণ/বিনিয়োগ বাবদ ব্যাংকের পাওনা পরিশোধের সক্ষমতা রয়েছে। আবার অনেকের নেই। অনেকের টাকা দেওয়ার মতো সক্ষমতা থাকলেও সরকারের নতুন নির্দেশনার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। সে কারণে সবাইকে ঢালাওভাবে এ সুযোগ না দিয়ে বেছে বেছে ঋণখেলাপি নীতিমালা শিথিলতার সময়সীমার পরামর্শ তাদের।
দেশের একাধিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী যায়যায়দিনকে জানিয়েছেন, শক্তিশালী কিছু ব্যবসায়ী আছেন তারা বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রেসার দিয়ে এসব ছাড়ের নীতিমালা করিয়ে নিচ্ছেন। তারা বলেন, এ মুহূর্তে ৫০ শতাংশের বেশি ঋণগ্রহীতা নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করে যাচ্ছেন। এ জন্য ঢালাওভাবে এ সুযোগ না দেওয়ার পক্ষে মত দেন ওই ব্যাংকাররা। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে তাদের বৈঠকের পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানা গেছে।