কাজী নজরুল ইসলামের ১২১ তম জন্ম জয়ন্তি

0
1089
কাজী নজরুল ইসলামের ১২১ তম জন্ম জয়ন্তি
করোনা মহামারির কারণে হচ্ছে না কবি নজরুলের জন্মদিনের আয়োজন।

কাজী নজরুল ইসলামের ১২১ তম জন্মজয়ন্তি আজ। প্রেম ও দ্রোহের কবি তিনি। এ হাতে ছিলো তার বাঁকা বাশেঁর বাঁশি, অন্য হাতে রণতুর্য।  ভীষণ প্রতিকুলতার মধ্যে বেড়ে উঠেও সৃষ্টিশীল এই মানুষটি জয় করেছিলেন বাঙালির হৃদয়। তার সাম্যবাদী চেতনা আজও উজ্জীবিত করে তরুণ সমাজকে।

প্রতিবছর নানান আচার, অনুষ্ঠানে বিদ্রোহী কবির জন্মদিন পালিত হলেও মহামারির কারণে এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। নেই জন্মদিনের অনুষ্ঠান, নেই কোন আয়োজন।

১৮৯৯ সালের ২৫শে মে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে। বাংলা ১১ই জ্যৈষ্ঠ, ১৩০৬ বঙ্গাব্দে। আনুষ্ঠানিক পড়াশুনা এগোয়নি কবি নজরুলের। কৈশোরে তিনি যোগ দেন লেটো গানের দলে। ১ম বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি যোগ দেন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে। সেখান থেকে ফিরে মুসলিম ভারত পত্রিকায় লেখা শুরু করেন ,তাতেই প্রকাশিত হয় কবির যুগান্তকারী কবিতা বিদ্রোহী।

১৯২২ সালে কাজী নজরুল নিজেই প্রকাশ করেন ধূমকেতু পত্রিকা। তৎকালীন ব্রিটিশ শাসন শোষণের বিরুদ্ধে লেখনীতে বলিষ্ঠ হাতিয়ার হয়ে ওঠে এই ধুমকেতু। এতেই কবি প্রকাশ করেন তার ধুমকেতু কবিতা।

এই কবিতার জন্যই ব্রিটিশ সরকারের হাতে গ্রেপ্তার হোন কবি। ১৯২২ সালে ব্রিটিশ সরকার নজরুলের ধুমকেতু পত্রিকা বন্ধ করে দেন। ১ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয় কবিকে। তবে সেই কারাগারে বসেই নজরুল লেখেন, সৃষ্টি সুখের উল্লাস,শিকল পড়ার গান। যেই গানগুলো আজও নবীনদের  উদ্দীপ্ত করে।

আলীপুরের সেই সেন্ট্রাল জেলে অবরুদ্ধ কবি ফাসির মঞ্চ দেখেই লিখেন দুর্গম গিরি কান্তার কবিতাটি।

কারাগারে দুর্বব্যবহারের কারণে কবি যখন অনশন করেন তখন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার অনশন ভঙ্গের অনুরোধ জানিয়ে টেলিগ্রাম পাঠান। তাকে উৎসর্গ করেন গীতিনাট্য বসন্ত। ব্রিটিশ সরকারের নানা শোষণ জুলুমের মধ্যে বিভিন্ন ভাবে দারিদ্রের শিকার হোন কবি। ১৯৫৬ সালে কয়েকজন সাহিত্যিক বন্ধুদের উপস্থীতিতে ঘরোয়াভাবে উতযাপিত হয় তাঁর জন্মদিন।

অসাম্প্রদায়িক চেতনার নজরুল ধর্মের ভেদাভেদ মানতেন না, তাইতো দূর্গার অশুর নিধন শক্তির আধারে লেখেন আনন্দময়ীর আগমনে, লেখেন প্রলোউল্লাস। একই সাথে নজরুল তার গানে আরবি ও ফারসি মিলে নতুন মাত্রা এনেছিলেন এবং তিনিই প্রথম বাংলা গজল গানের প্রবর্তক।

মানবিকতাই ছিলো নজরুলের কাছে সবচেয়ে বড় ধর্ম, তিনি কখনই ধনী দরিদ্রের ভেদাভেদ মানেননি। যে কারণে এই সময়েও নজরুলকে প্রাসঙ্গিক মনে করেন নজরুল ভক্তরা।

অনেকদিন রোগে ভুগেছেন কবি নজরুল। ১৯৭৬ সালে ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশেই রচিত হয়েছে কবির সমাধি।

আপনার মন্তব্য জানান